জাউয়া বাজার ডিগ্রি কলেজ
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
- আপলোড সময় : ২৬-০৮-২০২৪ ০২:১৬:৫০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৬-০৮-২০২৪ ০২:১৬:৫০ পূর্বাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ ::
ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনি শংকর ভৌমিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আছাদুর রহমান।
আবেদন সূত্রে জানাযায়, ২০২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল গাফফারের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তৎকালীন উপাধ্যক্ষ মনি শংকর ভৌমিক। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিয়োগবাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি করে আসছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরি শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ অনুযায়ী ৬ মাসের অধিক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে থাকতে না পারলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে আড়াই বছরের অধিক সময় ধরে অধ্যক্ষের পদে আসীন রয়েছেন মনি শংকর ভৌমিক। তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্সে তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সনে তথ্য গোপন করে উপাধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হন তিনি। অথচ শিক্ষকদের চাকরি শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ অনুযায়ী উপাধ্যক্ষ নিয়োগে ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর পর্যায়ে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ থাকা আবশ্যক।
এছাড়া উপাধ্যক্ষ নিয়োগে ডিগ্রি কলেজে ১২ বছরে পাঠদানের পাশাপাশি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতার বাধ্যবাধকতা রয়েছে - এমন নিয়মেরও তোয়াক্কা করেননি তিনি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে উপাধ্যক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি দাপট দেখিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া বেতন-ভাতা নেয়ার ক্ষেত্রে কলেজের ফান্ড থেকে মূল বেতনের শতকরা ৪০ ভাগ গ্রহণের বিধান থাকলেও তিনি গ্রহণ করছেন ৭০ ভাগ। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের সেলারি সিটে কলেজের ফান্ড থেকে ৩১ হাজার ২৭২ টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি। যা মূল বেতনের ৭০ ভাগ।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনি শংকর ভৌমিক কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তার সময়ে বিভিন্ন অনারারি শিক্ষক ও বিভিন্ন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী সমতা স্কুল এন্ড কলেজের যুক্তিবিদ্যার প্রভাষক গৌসুল হক নাঈমকে অনারারি আইসিটি শিক্ষক করেছেন তিনি। অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উচ্চ মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগের সনদ না থাকা সত্ত্বেও অজিত কুমার দাসকে সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়েছেন। আলমগীর নামে সমাজবিজ্ঞানের একজন অনারারি শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার পর নিয়মিত বেতন উত্তোলন করলেও তিনি গত ৫ মাস ধরে স্বাস্থ্য সহকারী পদে সরকারি চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মিত ল্যাবচার্জ, পাবলিক পরীক্ষা ফি, ভর্তি ফি, প্রশংসাপত্র, মার্কসিট উত্তোলন ফি, ইএসআইএফ ফি’র টাকা নয়ছয় করছেন। তাছাড়া যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসের ৩০ থেকে ৩৫টি গাছ কর্তন করে টাকা আত্মসাত করেছেন।
তবে এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনি শংকর ভৌমিক বলেন, আমার উপর যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আপনি অফিসে আসলে এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবো। এক পর্যায়ে তিনি ফোনকল কেটে দেন।
আবেদনের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, আবেদন পেয়েছি। আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)-কে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ